১। ভর্তিঃ শিশু শ্রেণী থেকে নবম শ্রেণীতে বছরের শুরুতে এবং আলিম, ফাযিল ও কামিল শ্রেণীতে শিক্ষাবর্ষের শুরুতে পত্র পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি ও পোষ্টার-লিফলেট ও ব্যানারের মাধ্যমে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হয়। সীমিত সংখ্যক আসনে প্রতিযোগিতামূলক ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে সেশন শুরুর প্রারম্ভেই ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করা হয়। ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর মাদ্রাসা অফিস থেকে ১০০৳ (একশত টাকার) বিনিময়ে ভর্তি আবেদন ফরম ও প্রসপেক্টাস সরবরাহ করা হয়।
২। ভর্তি পরীক্ষাঃ সদ্য তোলা ৩কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবিসহ (ছাত্রদের ক্ষেত্রে টুপি সম্বলিত এবং ছাত্রীদের ক্ষেত্রে বোরকা/ওড়না পরিহিত) ভর্তি ফরম পূরণ করে জমা দিয়ে নির্দিষ্ট তারিখে ভর্তি পরীক্ষার জন্য প্রবেশপত্র সংগ্রহ করতে হয়। শুধুমাত্র ভর্তি পরীক্ষায় কৃতকার্য ছাত্র-ছাত্রীকেই সংশ্লিষ্ট শ্রেণীতে ভর্তির অনুমতি দেয়া হয়। ভর্তির সময় টি.সি, জন্ম নিবন্ধন সনদ, চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট জমা দিতে হয়।
৩। ভর্তি পরীক্ষার বিষয়সমূহঃ
শিশু শ্রেণী থেকে ৩য় শ্রেণী পর্যন্তঃ
মৌখিক পরীক্ষা এবং শারীরিক ও মানসিক যোগ্যতা বিবেচনা করে ভর্তি করা হয়।
৪র্থ শ্রেণী থেকে ৯ম শ্রেণী ভর্তি পরীক্ষার বিষয় ভিত্তিক নম্বর নিম্নরূপঃ
বাংলা ১০ + ইংরেজী ১০ + গণিত ১০ + আরবী ১ম ও ২য় ৫০।
আলিমঃ বোর্ডের সার্কুলারের আলোকে। GPA 2.00 বা তার চাইতে কম প্রাপ্তদের ভর্তি করা হয় না।
ফাযিল ও কামিল শ্রেণীঃ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া কর্তৃক সার্কুলারের আলোকে।
৪। সেশন চার্জঃ
শ্রেণী |
সাধারণ |
বিজ্ঞান |
ক) শিশু থেকে ৫ম |
৪০০/- |
— |
খ) ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম |
৫০০/- |
— |
গ) ৯ম ও ১০ম |
৫০০/- |
৭০০/- |
ঘ) আলিম |
৬০০/- |
৯০০/- |
ঙ) ফাজিল ও কামিল |
৬০০/- |
— |
** সেশন চার্জ প্রতি বছর শিক্ষাবর্ষের প্রারম্ভেই পরিশোধ করতে হয়।
৫। মাসিক বেতনের হার নিম্নরূপঃ
শিশু থেকে ২য় শ্রেণী পর্যন্ত (মাসিক) |
১০০/- |
৩য় থেকে ১০ম শ্রেণী পর্যন্ত (মাসিক) |
১২০/- |
আলিম শ্রেণী থেকে কামিল (মাসিক) |
১৫০/- |
কম্পিউটার (মাসিক) |
৪০/- |
৬। পরীক্ষার ফীঃ
শিশু শ্রেণী |
১০০/- |
|
৭ম ও ৮ম শ্রেণী |
১৫০/- |
২য় শ্রেণী |
১২০/- |
|
৯ম ও ১০ম শ্রেণী |
১৮০/- |
৩য় ও ৪র্থ শ্রেণী |
১৩০/- |
|
আলিম |
২৩০/- |
৫ম ও ৬ষ্ঠ শ্রেণী |
১৪০/- |
|
ফাযিল ও কামিল |
২০০/- |
৭। ইউনিফর্মঃ ছাত্রদের জন্য সাদা পায়জামা, সাদা পাঞ্জাবী ও সাদা টুপি (সকল শ্রেণী) এবং ছাত্রীদের জন্য সাদা সেলোয়ার, সাদা ফ্রক ও সাদা স্কার্ফ (৫ম শ্রেণী পর্যন্ত) বাধ্যতামূলক। ৬ষ্ঠ থেকে উপরের শ্রেণীর ছাত্রীদের বোরকা বাধ্যতামূলক। নির্ধারিত ইউনিফরমসহ শ্রেণী কার্যক্রম অংশ নিতে হয়। ড্রেস পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হওয়া বাঞ্ছনীয়।
৮। শিক্ষার বিষয়বস্তু ও সিলেবাসঃ
ক) প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীকে তিনটি ভাষা শিক্ষা দেওয়া হয়। তা হচ্ছে বাংলা, আরবী ও ইংরেজী।
খ) প্রত্যেক শ্রেণীর জন্য নির্ধারিত সিলেবাস আছে। যা সেশনের শুরুতে আলাদাভাবে প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীকে প্রদান করা হয়।
৯। একাডেমিক ক্যালেন্ডারঃ বছরের শুরুতে একটি পাঠ পরিকল্পনা তৈরি করে একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ করা হয়। টিউটেরিয়াল পরীক্ষাসহ সকল পরীক্ষা, সাংস্কৃতিক সপ্তাহ পালন, দিবস উদযাপন ও সারা বছরের যাবতীয় কার্যক্রমের একটি সুনির্দিষ্ট দিন ও তারিখ এ ক্যালেন্ডার মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হয়। ফলে ছাত্র-অভিভাবক সকলেই মাদ্রাসার যাবতীয় কার্যক্রম সম্পর্কে পূর্বাহ্নেই জানার সুযোগ পান। ছাত্র-ছাত্রীরাও পরিকল্পিত ভাবে লেখাপড়ার সুয়োগ পায়।
১০। কম্পিউটার সংযোজনঃ প্রতিযোগিতা মূলক প্রযুক্তিগত বিশ্বে বিজ্ঞানের জয়যাত্রার সাথে আমাদের কচি-কাঁচা ছাত্র-ছাত্রীকে পরিচয় করানোর লক্ষ্যে ২০০২ইং থেকে পাঠ্য বিষয় হিসেবে কম্পিউটার সংযোজন করা হয়েছে। আমাদের কম্পিউটার শাখা, বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত। এ জন্য ১১টি কম্পিউটার সম্বলিত সুপরিসর ল্যাব রয়েছে। ইহা নির্দিষ্ট সিলেবাস অনুসারে পরিচালিত। ৫ম শ্রেণী থেকে ১০ম শ্রেণী পর্যন্ত কম্পিউটার অতিরিক্ত পাঠ্য বিষয় হিসেবে নির্ধারিত। এজন্য মাসিক অতিরিক্ত ল্যাব চার্জ দিতে হয়। ২০০৯ সালে ছাত্রী শাখায় কম্পিউটার বিভাগ চালু করা হয়। ৪০ এর অধিক প্রাপ্ত নম্বর মেধা স্কোর তৈরীতে যোগ করা হয়।
১১। কামিল হাদিস ও ফিক্হ বিভাগঃ বর্তমানে মাদ্রাসাটিতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়ার অধিনে ফাযিল বি.এ/বি.এস.এস এবং কামিল এম.এ/এম.এস.এস শ্রেণীতে হাদিস ও ফিকহ বিভাগ চালু আছে। ফাযিল শ্রেণীতে অনার্স কোর্স চালু করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধিন।
১২। বিজ্ঞান বিভাগঃ দাখিল পর্যায়ে বিজ্ঞান বিভাগ চালু আছে পূর্ব থেকেই। ২০০১ইং থেকে আলিম শ্রেণীতেও বিজ্ঞান চালু করা হয়েছে। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া কর্তৃক অনুমোদিত হলে ফাযিল শ্রেণীতে বি.এস-সি চালু করা হবে। ইনশা-আল্লাহ।
১৩। হিফজুল কুরআন বিভাগঃ মরহুম আলহাজ্ব শফিকুর রহমান হিফজুল কুরআন মাদরাসা নামে আলাদা ভবনে একটি হিফজুল কুরআন বিভাগ চালু আছে। দক্ষ হাফেজে কুরআন ও একটি মজবুত পরিচালনা কমিটির ব্যবস্থাপনায় হিফজ বিভাগের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। হিফজখানায় ছাত্রদেরকে সিলেবাস নির্ধারণ করে দিয়ে পাঠদান এবং সাময়িক ও বার্ষিক পরীক্ষার ব্যবস্থা আছে। তাদের যাবতীয় মনিটরিং করার জন্য দৈনিক ব্যক্তিগত রিপোর্ট সংরক্ষণের ব্যবস্থা আছে। হিফজ বিভাগে বাংলা ও ইংরেজী পাঠ দানের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। ফলে, একজন ছাত্র অল্প সময়ে হিফজ শেষ করে মাদ্রাসায় ৬ষ্ঠ বা ৭ম শ্রেণিতে ভর্তি হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে পারে।
১৪। স্কাউটিং ঃ দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ করার জন্য অত্র মাদ্রাসায় কাব স্কাউট, বয় স্কাউট ও রোবার স্কাউট এর কার্যক্রম চালু আছে। বর্তমানে উভয় গ্রুপের ৫টি উপদল আছে। উপজেলা ও জেলার বিভিন্ন কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করে আমাদের স্কাউট দল প্রসংশিত ও পুরস্কৃত হয়েছে এবং এ ধারা অব্যাহত আছে।
১৫। আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম এর সহযোগিতায় ডিপ্লোমা-ইন-এরাবিক ল্যাংগুয়েজ কোর্স চালুর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীণ।
১৬। সহশিক্ষা কার্যক্রম কর্মসূচিঃ লেখাপড়াকে আনন্দঘন করার লক্ষ্যে নিম্নলিখিত সহশিক্ষা কার্যক্রম চালু আছেঃ-
ক) পাঠাগারে অধ্যায়ন, বক্তৃতা অনুশীলনের জন্য সাপ্তাহিক জলসা, সাধারণ জ্ঞান প্রতযোগিতার ব্যবস্থা।
খ) সপ্তাহ ব্যাপী বার্ষিক ক্রিড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগীতা।
গ) জাতীয় ও ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ দিবস উদযাপন।
ঘ) শিক্ষা সফর ও বনভোজন।
ঙ) সাহিত্য-সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে প্রতিভা বিকাশের লক্ষ্যে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, দেয়াল পত্রিকা ও বার্ষিকী প্রকাশ এবং আলোচনা সভা ইত্যাদির আয়োজন করা হয়।
চ) সরকারী ও বেসরকারী সংস্থার উদ্যোগে আয়োজিত সাহিত্য-সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ।
ছ) অভিভাবক সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
জ) বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান করা হয়।
ঝ) ছাত্রদের মাঝে প্রতিযোগিতা মূলক পড়া-লেখার আগ্রহ জোরদার করার লক্ষ্যে সরকারী ও বেসরকারী উদ্যোগে আয়োজিত বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করানো হয়।
ঞ) বৃক্ষ রোপণ, সমাজ সেবা মুলক কাজ ও বিতর্ক প্রতিযোগিতা ইত্যাদি।
১৭। শ্রেণী কার্যক্রমঃ
ক) মর্ণিং শিফটের ক্লাস টাইম সকাল-৮.৩০টা থেকে ১.৩০টা পর্যন্ত। ডে শিফট বেলা ১১.০০টা থেকে বিকেল ৪.১৫ পর্যন্ত । তবে ঋতুভেদে এ সময়সূচী পরিবর্তনশীল।
খ) ক্লাসে ফাঁকি দিয়ে ছাত্ররা যাতে বাইরে ঘুরাফেরা করার সুযোগ না পায় সে জন্য মাদ্রাসা কার্যক্রম শুরুর ঘন্টা পড়ার সাথে সাথে গেইট বন্ধ করে দেয়া হয়। ক্লাস চলাকালীন সময় অভিভাবকগণ, অধ্যক্ষের বিশেষ অনুমতি সাপেক্ষে ছাত্রের সাথে সাক্ষাতের ব্যবস্থা নেয়া হয়।
গ) ক্লাসেই নির্ধারিত পাঠ শিখিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা নেয়া হয়।
ঘ) পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত ব্যক্তিগত ডাযেরী সংরক্ষণের এর ব্যবস্থা আছে।
ঙ) বাংলা, ইংরেজী ও আরবীতে হস্তাক্ষর সুন্দর করার উদ্যোগ গ্রহণ।
চ) ক্লাস টেস্ট, টিউটোরিয়াল পরীক্ষা ও পাঠ পর্যালোচনার মাধ্যমে নির্ধারিত সিলেবাস শেষ করা।
১৮। পরীক্ষা পদ্ধতিঃ এখানে পাঁচটি পরীক্ষা চালু আছেঃ-
ক) টিউটেরিয়াল পরীক্ষা খ) সাময়িক পরীক্ষা গ) বার্ষিক পরীক্ষা ঘ) প্রাক মূল্যায়ন ঙ) মডেল টেস্ট।
সাময়িক পরীক্ষা ও বার্ষিক পরীক্ষা সিলেবাসের আলোকে অনুষ্ঠিত হয়।
১৯। মূল্যায়ন পদ্ধতিঃ শিশু থেকে আলিম শ্রেণী পর্যন্ত গ্রেডিং পদ্ধতি এবং ফাযিল ও কামিল শ্রেণীতে সনাতন পদ্ধতিতে পরীক্ষার ফলাফল মূল্যায়ন করা হয়। এ ছাড়া টিউটোরিয়ার পরীক্ষার নম্বর সাময়িক পরীক্ষার নম্বরের সাথে যোগ করা হয়।
২০। ফলাফল তৈরীর নিয়মঃ ১ম সাময়িক পরীক্ষায় প্রাপ্ত GPA এর ২০%, ২য় সাময়িক পরীক্ষায় প্রাপ্ত GPA এর ২০% ও বার্ষিক পরীক্ষায় প্রাপ্ত GPA এর ৬০% এর ভিত্তিতে বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল তৈরী করা হয় এবং মেধাস্থান নির্ধারন করা হয়। এ কারণে প্রথম সাময়িক পরীক্ষার পর কোন ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করা হয় না।
২১। প্রগ্রেস রিপোর্টঃ প্রত্যেক সাময়িক পরীক্ষা ও বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর ছাত্র-ছাত্রীকে তার পাঠের অগ্রগতি বিবরণী দেয়া হয়। অভিভাবকগণ মন্তব্য লিখে স্বাক্ষর করে এক সপ্তাহের মধ্যে পূনরায় অফিসে জমা নেয়ার হয়।